সুনামগঞ্জ , মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫ , ৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত : পাইলটসহ নিহত ২০, আহত ১৭১ বিমানটি ঘনবসতি থেকে জনবিরল এলাকায় নিতে চেয়েছিলেন পাইলট শান্তিগঞ্জে গাছের চারা ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ জগন্নাথপুর পৌরসভার বাজেট ঘোষণা জগন্নাথপুরে নকল প্যাকেটে নিম্নমানের মসলা ও কেমিক্যালযুক্ত খেজুর গুড় বিক্রি পাইকুরাটি ইউনিয়ন বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন সড়কবিহীন কমিউনিটি ক্লিনিক, দুর্ভোগে মানুষ সুনামগঞ্জ বিএনপিতে ফাটল, ১৮ ইউনিটে পাল্টা কমিটি দেড় কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ বিশ্বম্ভরপুরে নারীর লাশ উদ্ধার দুই যুগ আগের ঝুলে থাকা ১০ হাজার মামলা নিষ্পত্তি করবে হাইকোর্ট পাঁচ মাসে নারী ও শিশু নির্যাতনের ৯১০০ মামলা বিএনপি’র বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি জগন্নাথপুরে রিংকনের মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়, শ্বাসরোধে হত্যা : পিবিআই হাউসবোটে বিদ্যুতের চোরাই জোগান! নৈতিক শিক্ষা-ভালো মানুষ হলেই দেশ উপকৃত হবে : সেনাপ্রধান জাতিসংঘের মানবাধিকার মিশন কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নে হাতিয়ার হবে না সীমান্তে জব্দকৃত ৯০টি ভারতীয় গরু গায়েব দোয়ারাবাজারে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০ ভাড়াটিয়াদের আটকে রাখেন বাড়িওয়ালা, উদ্ধার করলো পুলিশ

স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত : পাইলটসহ নিহত ২০, আহত ১৭১

  • আপলোড সময় : ২২-০৭-২০২৫ ০৪:২৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২২-০৭-২০২৫ ০৪:৩৪:১০ পূর্বাহ্ন
স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত : পাইলটসহ নিহত ২০, আহত ১৭১
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
ঢাকার উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভেতরে বিমান বাহিনীর একটি জঙ্গি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে; আহত ও দগ্ধ হয়েছেন ১৭১ জন। আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর জানিয়েছে, বিমান বাহিনীর ‘এফ-৭ বিজিআই’ ফাইটার জেটটি সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়নের ১২ মিনিটের মাথায় বিধ্বস্ত হয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জহিরুল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা গণমাধ্যমকে বলেন, “আমার কাছে মনে হয়েছে, উড়োজাহাজটা মাঠে আছড়ে পড়ে। তারপর ছেঁচড়ে ভবনে গিয়ে ধাক্কা খায়। সেখানেই আগুন ধরে যায়।” হায়দার আলী ভবন নামের ওই দুই তলা অ্যাকাডেমিক ভবনে ইংরেজি মাধ্যমের ক্লাস থ্রি থেকে এইটের শিক্ষার্থীদের ক্লাস হত। স্কুল ছুটির সময় হওয়ায় অনেক অভিভাবকও ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই উড়োজাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। অনেক দূর থেকেও সেখানে ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়। জ্বলন্ত উড়োজাহাজটির আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহ বুলবুল বলেন, “ওই ভবনে বাচ্চাদের ক্লাস চলছিল। আগুনে ভবন থেকে কেউ বের হতে পারেনি। অনেকেই সেখানে দগ্ধ হয়েছে।” দুর্ঘটনাস্থল থেকে আহত ও দগ্ধদের রিকশা, ঠেলাগাড়িসহ বিভিন্ন বাহনে করে সরিয়ে নিতে দেখা যায়। এক ডজনের বেশি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের পাঠানো হয় হাসপাতালে। তাদের একটি অংশকে প্রাথমিকভাবে ঢাকা সিএমএইচ, উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল, কুর্মিটোলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, লুবনা জেনারেল হাসপাতাল এন্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে নেওয়া হয়। দগ্ধদের অধিকাংশকে পরে পাঠানো হয় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, তাদের কর্মীরা ধ্বংসস্তূপ থেকে ১৯ জনের লাশ উদ্ধার করেছে।
আইএসপিআর জানায়, বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামসহ মোট ২০ জন সেখানে মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে ঢাকা সিএমএইচে নিহত ১২ জন, বার্ন ইনস্টিটিউটে ২ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হসপিটালে ২ জন, উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে ২ জন, ঢাকা মেডিকেলে ১, উত্তরা আধুনিক হসপিটালে ১ জনের লাশ আছে।
তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি।

স্কুল ভবন থেকে ১০০ গজের মধ্যে মোহাম্মদ জইমত আলীর এস্কেভেটর মেরামতের গ্যারেজ। চালক আপন আহমেদ কাজ করছিলেন। উড়োজাহাজ খুব নিচু দিয়ে উঠতে দেখে তারা দুজনে কিছুটা অবাক হয়েছিলেন। কয়েক মুহূর্ত পরেই বিকট শব্দ শুনে তারা প্রথমে ছুটে যান পাশের মেট্রোরেলের ডিপোর দিকে। পরে তারা দেখেন, স্কুল থেকে আগুন বের হচ্ছে। জইমত আলী বলেন, আমরা গিয়ে দেখি, একজন প্যারাসুট নিয়া নামছে। আর বহু বাচ্চা আর তাদের গার্ডিয়ানরা আগুনে পুড়ছে। সবাই ধরাধরি করে তাদের সেখান থেকে সরায়ে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু আগুনের তাপ ছিল সাংঘাতিক। স্কুলের ওই বিল্ডিংটার ভেতরে ঢোকার কোনো উপায় ছিল না। ওটার ভেতরে যারা ছিল, তাদের কী অবস্থা তা জানি না।
ভেকু চালক আপন আহমেদ বলেন, এক জায়গায় দেখি ১০-১৫ টা বাচ্চা ডলা হয়ে পইড়ে রইছে। তাদের উদ্ধার করার কোনো উপায় আমাদের ছিল না। এসব বাচ্চাদের বের করা হয়েছে, তারাও সব পুড়ে গেছে। জামা-কাপড় ব্যাগ সব পোড়া। আপন বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন চলে আসে। সন্তানের খোঁজে আহাজারি : একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স ছুটে চলছে সাইরেন বাজিয়ে, সেগুলোকে পাহারা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সামরিক যান। বাশি ফুঁয়ে ভিড় সামাল দেয়ার চেষ্টা করছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এর মাঝেই এক নারী চিৎকার করতে করতে মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। ফোনের ওপাশে ব্যক্তিকে কাঁদতে কাঁদতে বার বার জিজ্ঞেস করছেন ‘মিস আমার বাচ্চা কই’। দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সন্তানের খোঁজে অভিভাবক ও স্বজনরা ছুটে আসেন মাইলস্টোনে। মোবাইল ফোনে শিক্ষকের কাছে সন্তানের খোঁজ করা ওই নারী তাদেরই একজন। তিনি যখন চিৎকার করে কাঁদছিলেন তখন স্কুল ফটকে জড়ো হওয়া স্থানীয়রা তার সন্তানের এবং ক্লাসের নাম জানতে চান। তিনি বলেছেন তার ছেলের নাম সাজ্জাদ সাদী, ছেলেটি দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সেখানে উপস্থিত একজন এই অভিভাবককে আশ্বস্ত করে বলেন, “আপা একদম চিন্তা করবেন না। ক্লাস টেনের বাচ্চাদের কিছুই হয়নি। আমরা ভেতরে গিয়েছিলাম। ক্লাস ফোর আর ক্লাস ফাইভের বাচ্চারাই মূলত বেশি হতাহত হয়েছে।” ওই অভিভাবক বলেন, “আমার ছেলের প্রিটেস্ট পরীক্ষা চলছে। ওর কাছে ফোন নেই, এতটা সময় হয়ে গেল কিন্তু ও কোনো খবরও দেয়নি। আমি কোনোরকমে এসেছি। ওর ক্লাস টিচারকে ফোন করেছি তিনি কিছু জানেন না। ওর মিসরাও কোন খবর দিতে পারেননি।” সাদীর মায়ের মত তানিয়া আহমেদ নামের আরো এক অভিভাবক বলেছেন তার মেয়ে রাইসা আহমেদ উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্রী। তার খোঁজ তিনি পাচ্ছেন না। আহাজারি হাসপাতালেও : উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশের চিকিৎসা চলছে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। সেখানকার জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলছে ১১ বছর বয়সী চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিদ হাসান আরিয়ান, সপ্তম শ্রেণি পড়–য়া শায়ান, তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া জুনায়েদ হাসানসহ আরো বহু শিক্ষার্থীর। জরুরি বিভাগের বাইরে অপেক্ষায় আছেন এসব শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা। যাদের আহাজারিতে ভারি ওঠে সেখানকার পরিবেশ।
ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বলেন এখন পর্যন্ত ৬০ জনকে জরুরি বিভাগে আনা হয়েছে। দগ্ধদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী। তাদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। সারা শরীর পুড়ে যাওয়া ১১ বছর বয়সী আরিয়ানের যখন জরুরি বিভাগের ভেতরে চিকিৎসা চলছিল, বাইরে বসে তার মা মনিকা আক্তার আঁখি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আল্লাহ আমার সন্তানরে আমার কাছে ফিরাইয়া দেও। সকাল পৌনে আটটায় স্কুলে গেছে। দেড়টায় ছুটি হওয়ার কথা ছিল, এরপর দেড়টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত কোচিং। সকালে ছেলেরে খাবার দিয়া দিছি, এরমধ্যে এই ঘটনা ঘটল। স্কুলের কাছেই তাদের বাসা, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ছেলের খোঁজে স্কুলে ছুটে যান বলে জানিয়েছেন আঁখি; এরপর গিয়ে ওই মা ছেলেকে দগ্ধ অবস্থায় পান। সেখান থেকে তাকে প্রথমে বাংলাদেশ মেডিকেলে নেওয়া হয়। ওই হাসপাতাল থেকে আরিয়ানকে বার্ন ইনস্টিটিউটে পাঠিয়ে দেয় উন্নত চিকিৎসার জন্য। সপ্তম শ্রেণির শায়ানের শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ফুপু রুবিনা আক্তার। উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের এই বাসিন্দা বলেন, সকাল বেলা সুস্থ ছেলেটা বাসা থেকে বের হইল, আর এখন হাসপাতালে। তৃতীয় শ্রেণি পড়ুয়া জুনায়েদ হাসানের মা ঝর্না আক্তারও জরুরি বিভাগের সামনে কাঁদছিলেন। নয়া নগরের এই বাসিন্দা জানিয়েছেন, তার ছেলেকে আইসিউতে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আর একটু পরেই ছুটি হইলে ছেলে বাসায় চলে যেত। আর এখন ছেলে আমার আইসিইউতে। একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাইয়ুম খান বলেন, জুনিয়রদের শিফটটা সকাল থেকে শুরু হয়। ঘটনার সময় ক্লাসে ছিলাম। তারপর বিকট শব্দ শুনে দেখি আগুন, অবস্থা খারাপ। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে। তারপর ফায়ার সার্ভিস আসে। এক আন্টি বলেন বাবা আমার মেয়েকে একটু ধরো, তার দুই হাত পুড়ে গেছে। পরে তাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি।
উত্তরা আধুনিক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক চিকিৎসক আকাশ বলেন, বেশিরভাগের শরীর ৬০-৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের অনেকের বয়স ১৪ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। কেমন বিমান এফ-৭ বিজিআই : এফ-৭ বিজিআই মূলত চীনের তৈরি চেংদু জে-৭ সিরিজের একটি মাল্টি-রোল জেট ফাইটার। সোভিয়েত আমলের মিগ ২১ এর উন্নত এই চীনা সংস্করণ তৈরি করেছে চেংদু এয়ারক্র্যাফট করপোরেশন। চেংদু জে-৭ সিরিজের সবচেয়ে আধুনিক সংস্করণ এফ-৭ বিজিআই। এক ইঞ্জিনের এ বিমানের সর্বোচ্চ গতি মাক ২.২ (শব্দের গতির ২.২ গুণ)। আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, লেজার গাইডেড বোমা ও জিপিএস গাইডেড বোমা, বাড়তি জ্বালানি ট্যাংকসহ দেড় হাজার কেজি ওজন বইতে পারে এসব জঙ্গি বিমান। এ বিমানের ককপিটে একজন বৈমানিক বসতে পারেন। কেএলজে-৬ এফ রাডার ব্যবহার করা হয় এফ-৭ বিজিআই বিমানে। বাংলদেশ বিমান বাহিনীর মোট ৩৬টি এফ-৭ যুদ্ধবিমান রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই এফ-৭ বিজিআই। এছাড়া এফটি-৭এমবি ও এফ-৭বিজি ভ্যারিয়েন্টও রয়েছে। ২০১১ সালে বাংলাদেশ চীনের কাছ থেকে ১৬টি জেট ফাইটার কেনার চুক্তি করে এবং ২০১৩ সালে সেগুলো বিমান বাহিনীর বহরে যুক্ত হয়। ওই বছরই চেংদু এয়ারক্র্যাফট করপোরেশন এই মডেলের উড়োজাহাজের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। এর আগে ২০১৮ সালের নভেম্বরে টাঙ্গাইলের মধুপুরে মহড়ার সময় বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এরপর ২০২১ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের পর বঙ্গোপসাগরে বিধ্বস্ত হয় একটি এফ-৭ এমবি। ওই দুই ঘটনায় দুজন বৈমানিক নিহত হন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স